কাউন |
বাংলাদেশের চর এলাকায় এবং ভারতের খরা প্রবণ এলাকায় কাউনের চাষ হয়। বাংলাদেশে অনেকে কাউনকে কাউন চালও বলেন। বিস্কুট, হালুয়া, কেকসহ নানা ধরনের মিষ্টান্ত এর ব্যবহার রয়েছে। দেশে কাউন এখন রীতিমতো বিলাসী শস্য। এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। এ ফসল চাষে তেমন খরচ হয় না বললেই চলে।
মাটি
প্রায় সব ধরনের মাটিতেই কাউনের চাষ করা যায়। তবে পানি দাঁড়ায় না এমন বেলে দোআঁশ মাটিতে এর ফলন ভাল হয়।
বপনের সময়
দেশের উত্তরাঞ্চলে অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস (মধ্য-নভেম্বর থেকে মধ্য-ফেব্রুয়ারি ) পর্যন্ত বীজ বোনা যায়। দেশের দক্ষিনাঞ্চলে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে বীজ বোনা হয়।
বীজের হার
কাউনের বীজ ছিটিয়ে বা সারিতে বোনা যায়। ছিটিয়ে বুনলে হেক্টর প্রতি ১০ কেজি এবংসারিতে বুনলে হেক্টর প্রতি ৮ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। বীজ সারিতে বুনলে সারি থেকে সারির দূরত্ব ২৫-৩০ সেমি রাখতে হবে। চারা গজানোর পর ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে সারিতে চারার দূরত্ব ৬-৮ সেমি রেখে বাকী চারা তুলে ফেলতে হবে।
সারের পরিমানঃ
কাউন চাষে সচরাচর রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয়না। তবে অনুর্বর জমিতে হেক্টরপ্রতি নিম্নরূপ সার প্রয়োগ করলে ফলন বেশী হয়।
সারের নাম সারের পরিমান/ হেক্টর
ইউরিয়া ৯৫-১০৫ কেজি
টিএসপি ৭০-৭৫ কেজি
এমপি ৩০-৪০ কেজি
কাউন চাল |
সেচবিহীন চাষে সবটুকু সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। সেচের ব্যবস্থা থাকলে শেষ চাষের সময় অর্ধেক ইউরিয়া এবং সবটুকু টিএসপি ও এমপি সার প্রয়োগ করতে হবে। বাকী অর্ধেক ইউরিয়া বীজ বপনের ৩৫-৪০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
পানি সেচ
কাউন একটি খরা সহিষ্ণু ফসল। তবে রবি মৌসুমে খরা দেখা দিলে ১-২টি হালকা সেচের ব্যবস্থা করলে ফলন বেশী হয়।
ফসল সংগ্রহ
কাউনের শীষ খড়ের রং ধারণ করলে এবং বীজ দাঁতে কাটার পর ‘কট্’ করে শব্দ হলে বুঝতে হবে কাটার উপযুক্ত সময় হয়েছে।
সূত্র: কৃষি প্রযুক্তি হ্যান্ডবুক, বারি
0 Comments