আজকাল তো নগরকৃষি নামে নতুন কৃষির রমরমা। শহরে সবাই এখন ছাদে বারান্দায় সবজি চাষের চেষ্টা করছেন। ছাদে বা বারান্দায় সবচি, ফল-মূল চাষের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ: এক. অল্প সময়ের মধ্যে ফসল সংগ্রহ, দুই. গাছের আকার ছোট। এর জন্য দরকার বিশেষ জাত। তবে এখন প্রায় সব নার্সারিতে কলম পাওয়া যায়। কলম গাছ আকারে ছোট, ফল আসে দ্রুত। ফলনও সন্তোষজনক।
তবে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম আমিনুল ইসলাম এমন এক জাতের শিম উদ্ভাবন করেছেন যেটির গাছ আকারে বেশ ছোট। আর এ শিমের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট্য হলো- এটি আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ফল ধরে। গত সেপ্টেম্বরেই জাতটি অবমুক্ত করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ বোর্ড। তার মানে খোঁজ করলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বা বিএডিসিতে এই জাতের শিমের বীজ পাওয়া যেতে পারে।
জাতটির উদ্ভাবক অধ্যাপক একেএম আমিনুল ইসলাম সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনকে জানান, বাণিজ্যিক কৃষির বিষয়টি মাথায় রেখে জমির আইল এবং বাড়ির ছাদে চাষ উপযোগী বিইউ শিম ৫ নামের জাতটি উদ্ভাবন করেন তিনি।
জাতটির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো আগাম জাত হিসেবে জুলাই-আগস্ট মাস থেকেই এর বীজ বপন করা যায়। গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত সম্পূর্ণ গাছে ফল ধরে। শিমের রং গাঢ় সবুজ, মাংসল এবং শাঁস অত্যন্ত নরম। এই শিম সারা দেশে চাষযোগ্য। অর্থাৎ যথেষ্ট পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা আছে এমন যেকোনো ধরনের মাটিতেই এই শিম চাষ করা যাবে। এই শিম জমির আইলে ও ছাদ বাগানে টবে স্টিকের মধ্যে (মাচা বিহীন) চাষ করা যায়। গাছ প্রতি শিম পাওয়া যায় ৫-৭ কেজি।
বিইউ শিম ৫ জাতটি দেশীয় শিমের দুইটি স্থানীয় জাতের মধ্যে সংকরায়ন পরবর্তী বিশুদ্ধ সারি নির্বাচন পদ্ধতিতে উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর জন্য প্রায় ৮ বছর সময় লেগেছে। জাতটির অঙ্গজ বৃদ্ধি কম হওয়ায় স্বল্প জায়গায় ফসলের জমির আইলে, কিংবা ছাদের টবে সহজেই চাষ করা যায়। বাণিজ্যিকভাবে সাধারণ জমির মাচাতেও চাষ করা যাবে।
1 Comments
This comment has been removed by a blog administrator.
ReplyDelete