দক্ষ বাস্তুসংস্থান ব্যবস্থাপনা এবং মানসম্পন্ন খাদ্য উৎপাদনের জন্য বর্তমানে হাইড্রোপনিক পদ্ধতি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। মাটিভিত্তিক কৃষি এখন নগরায়ণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, রাসায়নিক ও কীটনাশকের নির্বিচার ব্যবহার (যা ভূমির উর্বরতা হ্রাস করছে) নানা সঙ্কটের মুখোমুখি।
বিকল্প উপায় হিসেবে হাইড্রোপনিক পদ্ধতি নিয়ে আজকাল খুব আলোচনা হচ্ছে। যেমনটি শোনা যাচ্ছে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের কথা। বিশেষ করে শহরে যারা বাস করেন এবং ফসল উৎপাদনে আগ্রহী তারা এই পদ্ধতির বিষয়ে খুব উৎসাহী। কিন্তু দেশে এখনো এ পদ্ধতির সফল কোনো দৃষ্টান্ত নেই। তাছাড়া এমন কোনো ইনস্টিটিউটও নেই যেখানে যথাযথ প্রশিক্ষণ নেয়া যেতে পারে।
হাইড্রোপনিক পদ্ধতির নানা ধরন রয়েছে। এর মধ্যে উইক (wick), ভাটা ও প্রবাহ, ড্রিপ, ডিপ ওয়াটার কালচার এবং নিউট্রিয়েন্ট ফিল্ম টেকনিক (এনএফটি) অন্যতম। সবগুলো পদ্ধতিরই সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এসব পদ্ধতিতে টমেটো, শসা, গোলমরিচ এবং লেটুসসহ বেশ কয়েক ধরনের ফসল চাষ করা সম্ভব।
হাইড্রোপনিক পদ্ধতির বেশ কয়েকটি সুবিধার মধ্যে অন্যতম হলো প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে ফসলের বৃদ্ধি দ্রুত, রোগবালাই কম এবং কীটপতঙ্গ ও আগাছা নিয়ে ভাবতে হয় না।
বাণিজ্যিকভাবে এনএফটি কৌশল বিশ্বজুড়ে লেটুস এবং অন্যান্য শাকসবজির জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এতে ৭০ থেকে ৯০% পানির সাশ্রয় হয়।
হাইড্রোপোনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলো হলো: নেদারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, ইসরায়েল, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্র।
আমাদের জন্য এ পদ্ধতিটি অনেকটা উচ্চাভিলাসী হলেও দক্ষতার সঙ্গে করতে পারলে যে লাভজনক হবে তাতে সন্দেহ নেই। তাই যারা হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে সবজি চাষ করার চিন্তাভাবনা করছেন তাদের আগে এ পদ্ধতির সুবিধা অসুবিধাগুলো জেনে নেয়া দরকার। আর এই বইটি তাদের জন্যই উপযুক্ত।
0 Comments