কথায় বলে, পাগলে কি-না বলে আর ছাগলে কি-না খায়। গ্রামেগঞ্জে সম্ভবত সবচেয়ে সনাতন ও বেশি শোনা প্রবাদ এটি। তার মানে ছাগল দুনিয়ার সব খায়। লতাপাতা, কাগজ, কাপড়, পলিথিন সব! এই কথাটি সত্য নয়। আসলে গবাদিপশুর মধ্যে ছাগলই সবচেয়ে সৌখিন প্রাণী। এরা খাবার ও বাসস্থানের ব্যাপারে খুব খুঁতখুঁতে হয়। এদের ঘ্রাণশক্তি তীব্র। খাবারের গন্ধ পছন্দ না হলে সেটি মুখেই নিবে না। আবার উঁচু শুকনো জায়গা ছাড়া এরা থাকতে চায় না।
ছাগল কখনোই প্রতিকূল আবহাওয়া এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থানগত অস্বাস্থ্যকর বাসস্থানে অরুচিকর খাবার খেয়ে জীবণ ধারণ, বাচ্চা দেওয়া, দুধ দেওয়া এবং এমনকি বংশবিস্তার করে না।
তবে তাই বলে ছাগল পালন যে খুব ব্যয়বহুল তা কিন্তু নয়। সহজলভ্য ও সস্তা খাবার দিয়েই স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখলে ছাগল দ্রুত উৎপাদনশীল হয়। বিশেষ করে দেশী ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগল অবিশ্বাস্য রকম উৎপাদনশীল। এরা বছরে বছরে দুইবার করে বাচ্চা দেয়। তাছাড়া একবারে একাধিক বাচ্চা দিয়ে থাকে। আবার ভালো যত্ন নিলে ছয় মাসেই বাচ্চা বিক্রির উপযোগী হয়।
তবে সংখ্যায় কম ছাগল পালন করে একসঙ্গে বেশি টাকা পেতে চাইলে কিছু বিদেশী জাতের ছাগল পালন করা যেতে পারে। এদের জন্য অবশ্য খরচও একটু বেশি হবে। কিন্তু এক ছাগলই যখন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করবেন তখন ঠিকই পুষিয়ে যাবে।
আমরা এখানে ছাগল পালন ও ছাগলের খামার বিষয়ে প্রশ্নোত্তর আকারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানবো:
১. দেশে কোন জাতের ছাগল বেশি পালন করা হয়?
• স্থানীয় কালো জাতের বা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল।
২. ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাড়া আর কোন কোন জাতের ছাগল পালন করা হয়?
• বোয়ের, সুদানিজ, ডেজার্ট, বারবারি, যমুনাপাড়ি এবং আরও কয়েকটি জাতের ছাগল বর্তমানে খামারিরা পালন করছেন।
৩. ব্ল্যাক বেঙ্গল কি জন্যে পালন করা হয়?
• বিশ্ববিখ্যাত চামড়া উৎপাদনের জন্য। এই চামড়াকে বলে কুষ্টিয়া গ্রেড।
৪. ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের ওজন কত কেজি হতে পারে?
• ১৫-২০ কেজি।
৫. প্রতিদিন ছাগলের ওজন কত বাড়তে পারে?
• ২০ থেকে ৪৫ গ্রাম।
৬. ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বিশেষ গুণ কী?
• চামড়া ভালো এবং এটি অপেক্ষাকৃত অধিক হারে বাচ্চা দেয়।
৭. ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বাচ্চার মৃত্যুর হার বেশি হয় কেন?
• অল্প দুধ এবং বেশি বাচ্চা দেয় বিধায় দুধের অভাবে বাচ্চার মৃত্যুর হার বেশি হয়।
৮. ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কতটুকু দুধ দেয়?
• সর্বোচ্চ ১.৫ কেজি।
৯. বিদেশী ছাগল কতটুকু দুধ দেয়?
• প্রায় ২.৫ কেজি।
১০. একটি পাঁঠা দিয়ে কতগুলো ছাগীকে পাল দেওয়া যেতে পারে?
• ১০-১২ টি ছাগীকে।
১১. পারিবারিক পর্যায়ে কয়টি ছাগল পালা সুবিধাজনক?
• ১০-১২ টি।
১২. বসতবাড়ির আঙ্গিনায় অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহ ছাড়া কয়টি ছাগল পালা যাবে?
• ৫-৬টি।
১৩. কত বয়সে ছাগল বিক্রি করা যায়?
• খাসী ৮-১২ মাসের মধ্যে এবং পাঠী ৬-৭ মাসের মধ্যে।
১৪. ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল সাধারণত সর্বোচ্চ কতটি বাচ্চা দিতে পারে?
• ৫-৬টি।
১৫. ছাগলের ঘরের পরিবেশ কেমন হতে হবে?
• পরিষ্কার, শুষ্ক, দুর্গন্ধমুক্ত, উষ্ণ ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
১৬. কোন পরিবেশ ছাগলের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
• গোবরযুক্ত, স্যাঁতস্যাঁতে, অন্ধকার ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ।
১৭. সাধারণত ছাগলের কী কী রোগ হয়?
• নিউমোনিয়া, একজিমা, চর্মরোগ, পাতলা পায়খানা, পরজীবী এবং খাদ্যে বিষক্রিয়া।
১৮. রোগ হলে ছাগলের কী কী ক্ষতি হয়?
• ওজন কমে যায়, পেটের বাচ্চা পড়ে যায়, চামড়ার গুণ নষ্ট হয় ও বাচ্চা দেওয়া কমে যায়।
১৯. কী কী পদ্ধতিতে ছাগল পালা যায়?
• ছেড়ে দিয়ে, ঘরে রেখে এবং ঘরে ও বাইরে উভয় অবস্থাতেই পালা যায়।
২০. ছাগলের জন্য কতটুকু জায়গা লাগে?
• প্রতিটি বড় ও প্রাপ্তবয়স্ক ছাগলের জন্য ৮-১০ বর্গফুট এবং প্রতিটি বাড়ন্ত বাচ্চা ছাগলের জন্য ৪-৫ বর্গফুট।
২১. ছাগলের ঘর কী কী জিনিস দিয়ে বানানো যায়?
• ছন, গোলপাতা, খড় ও বাঁশ দিয়ে ঘর বানানো যায়। আর্থিক অবস্থায় কুলালে পলিথিন ব্যবহার করা যায়।
২২. ছাগলের শীত নিবারণ কীভাবে করা যায়?
• ঘরের বেড়ার সাথে চট দেওয়া যেতে পারে।
২৩. ছাগল কী কী খাবার খায়?
• অনেক ধরনের লতাপাতাসহ প্রায় সব প্রকার খাবার খায়। তবে খাদ্যে বিষক্রিয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
২৪. বাচ্চা প্রসবের পরে ছাগলের বাচ্চাকে কী ধরনের খাবার দেওয়া উচিৎ?
• প্রথম তিন দিন শালদুধ এবং গাভীর সাধারণ দুধ ছাগলের বাচ্চাকে খেতে দেওয়া উচিৎ।
২৫. শালদুধ কী?
• বাচ্চা প্রসবের আগে ও পরের তিন দিনের দুধকে শালদুধ বলে।
২৬. ছাগলের সাধারণ দুধ ও শালদুধ পানের পার্থক্য কী?
• শালদুধে পুষ্টি ও খাদ্যগুণ বেশি থাকে।
২৭. সদ্যজাত স্বাভাবিক বাচ্চার ওজন কত?
• ৮০০ গ্রাম থেকে ১.৫ কেজি।
২৮. জন্মের পরপরই কী খাওয়াতে হবে?
• নাক ও শরীরের শ্লেষ্মা পরিষ্কার করে শালদুধ খাওয়াতে হবে।
২৯. কী পরিমাণ শালদুধ ছাগলের বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে?
• প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম।
৩০. শালদুধ দিনে কতবার খাওয়াতে হবে?
• দিনে ৮-১০ বার খাওয়াতে হবে।
৩১. দেরিতে শালদুধ খাওয়ালে কী ক্ষতি হয়?
• শালদুধ জমে যায়।
৩২. শালদুধ খাওয়ানোর উপকারিতা কী?
• শালদুধে বাচ্চার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৩৩. প্রতি ছাগলের শালদুধ থেকে কয়টি বাচ্চাকে খাওয়ানো যেতে পারে?
• দুটি বাচ্চাকে খাওয়ানো উত্তম।
৩৪. বেশি বাচ্চা হলে কী কী খাওয়াতে হবে?
• গাভীর দুধ ও ভাতের মাড় খাওয়ানো যেতে পারে।
৩৫. কত বয়সের বাচ্চাকে ঘাস খাওয়ানোর অভ্যাস করানো যেতে পারে?
• প্রথম সপ্তাহের পরপরই বাচ্চাকে ঘাস খাওয়ানোর অভ্যাস করানো দরকার।
৩৬. ঘাস খাওয়ার অভ্যাস করতে কতদিন সময় লাগবে?
• ২৫-৩০ দিন।
৩৭. কী কী ঘাস খাওয়ানো যেতে পারে?
• কচি ঘাস, দুর্বা, সেচি, আরাইল্যা, মাশকলাই, খেসারি আর উন্নত কচি ঘাস হিসেবে নেপিয়ার, রোজি, প্লিকাটুলাম, এন্ড্রোপোগন, সেন্ট্রোসোমা ইত্যাদি।
৩৮. বয়স বাড়ার সাথে সাথে ছাগলকে কী পরিমাণ খাবার খাওয়াতে হবে?
• এক সপ্তাহ থেকে বার সপ্তাহ পর্যন্ত ২০০ গ্রাম থেকে শুরু করে প্রতি সপ্তাহে ৫০ গ্রাম ছাগলের দুধ খাওয়াতে হবে।
৩৯. ভাতের মাড় কী পরিমাণে খাওয়াতে হবে?
• দুই থেকে চার সপ্তাহে দুধের সাথে সামান্য পরিমাণে ভাতের মাড় এবং পাঁচ থেকে বারো সপ্তাহের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে ৫০ গ্রাম পর্যন্ত বাড়াতে হবে।
৪০. কচি ঘাস কী পরিমাণে খাওয়াতে হবে?
• দুই থেকে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত সামান্য পরিমাণে এবং পরবর্তীতে বারো সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে।
৪১. জন্মের পর বাচ্চার নাভী কিভাবে কাটতে হবে?
• চামড়ার কাছ থেকে ৫-৭ সেন্টিমিটার রেখে কাটতে হবে।
৪২. শালদুধ কীভাবে খাওয়াতে হবে?
• ছোট ফিডার বোতলে শালদুধ ভরে।
৪৩. দুধের তাপমাত্রা কত ডিগ্রি থাকতে হবে?
• ৩৮-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ দুধ কুসুম গরম থাকা অবস্থায় খাওয়াতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বেশি গরম বা ঠান্ডা নয়।
৪৪. বাচ্চার ঘরের তাপমাত্রা কত ডিগ্রি থাকতে হবে?
• ২৫-২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
৪৫. অতিরিক্ত দুধ খাওয়ালে কি ক্ষতি হবে?
• বাচ্চার পাতলা পায়খানা হতে পারে।
৪৬. দেশীয় ছাগলের বাচ্চার ওজন সাধারণত কোন বয়সে বেশি বাড়ে?
• ৩-১২ সপ্তাহ বয়সে।
৪৭. ছাগলের বাচ্চাকে সাধারণত কখন খাসী করানো হয়?
• ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে।
৪৮. কোন পদ্ধতিতে খাসী করানো হয়?
• দেশীয় পদ্ধতিতে অন্ডকোষ বের করে ফেলা হয়। অন্য ব্যবস্থাও আছে। তবে এটা সম্ভবত সবচেয়ে কম কষ্টদায়ক।
৪৯. খাসী করানোর সময় কী ধরনের সতর্কতা গ্রহণ করতে হয়?
• অভিজ্ঞ ব্যক্তির দ্বারা খাসী করাতে হবে। সংক্রমণ প্রতিরোধে ভালো জীবাণুনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
৫০. সব বয়সের ছাগলের খাবার এক ধরনের হবে কি?
• না, প্রজনন ও মাংস-প্রদানকারী ছাগলের জন্য নিয়মমাফিক আলাদা আলাদা খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
৫১. কোন সময়ে বাচ্চার মৃত্যুর হার বেশি?
• প্রসবের সাথে সাথে এবং দুধ ছাড়ার পর থেকে পাঁচ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত।
৫২. কী কী কারণে মৃত্যুর হার বাড়ে?
• খাদ্যে আমিষের ঘাটতি। হজমে সমস্যা ইত্যাদি কারণে পুষ্টিহীনতায় মারা যেতে পারে।
৫৩. শুষ্ক খাবার কী হারে দেওয়া উচিৎ?
• শরীরের ওজনের ৪-৫% হারে।
৫৪. দানাদার খাদ্য কোন নিয়মে খাওয়াতে হবে?
• দুই মাস বয়সে ১০০ গ্রাম হিসাবে প্রতি মাসে ৫০ গ্রাম বাড়াতে হবে এক বছর পর্যন্ত।
৫৫. কোন নিয়মে ঘাস-পাতা খাওয়াতে হবে?
• দ্বিতীয় মাসে ৪০০ গ্রাম হিসাবে আস্তে আস্তে বাড়িয়ে এক বৎসর বয়সে ৩.৫ কেজি পর্যন্ত সরবরাহ করতে হবে।
৫৬. দৈহিক ওজনের তুলনায় দুগ্ধবতী ছাগী কী পরিমাণ খাবার খায়?
• শরীরের ওজনের ৫-৬% হারে।
৫৭. তিন বছর বয়সে একটি ছাগীর ওজন কত কেজি হয়?
• ২০-২৫ কেজি।
৫৮. এই সময় একটি ছাগী কতটুকু খাবার খায়?
• দৈনিক প্রায় ১.৫ কেজি।
৫৯. প্রতিদিন একটি ছাগী সাধারণত কত লিটার দুধ দেয়?
• ৪০০ মিলি লিটার থেকে ১ লিটার।
৬০. বাচ্চা দেওয়ার কতদিন পর ছাগল হিটে আসে?
• বাচ্চা দেওয়ার তিন সপ্তাহ পর।
৬১. দেশী ছাগী বছরে কতবার বাচ্চা দেয়?
• দুই বার।
৬২. জন্মের পর বাচ্চার গড় ওজন কত হয়?
• ১.২৫ কেজি।
৬৩. প্রাপ্তবয়স্ক ছাগলকে দানাদার খাদ্য কী পরিমাণে দিতে হবে?
• গম, ভুট্টা, ভাঙ্গা-চাল ১২%, গমের ভূষি ও কুঁড়া ৪৭%, যেকোনো ভূষি ১৬%, খৈল ২১.৫%, খনিজ ২%, লবণ ১% এবং খাদ্যপ্রাণ ও খনিজ ০.৫% ।
৬৪. দশটি ছাগলের জন্য প্রতিদিন মোট কত কেজি ঘাসের প্রয়োজন হয়?
• প্রায় ১৩ কেজি।
৬৫. ছাগলকে ইউরিয়া সার খাওয়ানো যায় কি?
• হ্যাঁ, খড় : ইউরিয়া : চিটাগুড = ৮২%+৩%+১৫% হারে খাওয়াতে হবে।
৬৬. ছাগলকে সরাসরি চিটাগুড় খাওয়ানো যাবে কি?
• ছাগলকে সরাসরি চিটাগুড় খাওয়ানো যাবে না। এতে পাতলা পায়খানা বা বিষক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
৬৭. ঘাস বা খড়ের টুকরা আকারে কী রকম হতে হবে?
• খড়ের টুকরা ১.৫-২.০ ইঞ্চি লম্বা।
৬৮. একটি ছাগী কোন বয়সে যৌবনপ্রাপ্ত হয়?
• পাঁচ থেকে ছয় মাস বয়সে।
৬৯. কত মাস বয়সে ছাগীকে পাল দেওয়া হয়?
• সাত থেকে আট মাস বয়সে।
৭০. যৌবনপ্রাপ্ত বয়সে ছাগীর ওজন সাধারণত কত হয়?
• ১২-১৩ কেজি।
৭১. প্রাপ্ত বয়স্ক ছাগীর গরম হওয়ার লক্ষণগুলো কী কী?
• যোনীতে শ্লেষ্মা নির্গত হয়, ঘন ঘন অস্বাভাবিক ডাকাডাকি করে ও অন্য ছাগীর উপর উঠতে চায়।
৭২. পাল দেওয়ার সঠিক সময় কোনটি?
• গরম হওয়ার ১২-৩৬ ঘণ্টা পর।
৭৩. দিনে কোন সময় পাল দিতে হবে?
• সকালে গরম হলে বিকালে আর বিকালে গরম হলে সকালে।
৭৪. ছাগলের সাধারণ রোগের প্রতিরোধের জন্য কি ব্যবস্থা নিতে হবে?
• অবশ্যই পিপিআর ও অন্যান্য টিকা ও কৃমিনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
৭৫. ছাগলের সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগ কোনগুলো?
• পিপিআর ও গোট-পক্স।
৭৬. বছরে কতবার ছাগলকে কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে?
• দুই বার।
৭৭. কোন কোন সময়ে কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে?
• এপ্রিল-মে এবং অক্টোবর-নভেম্বর মাসে।
৭৮. বর্তমানে কী কী কৃমিনাশক খাওয়ানো ভালো?
• যে কোনো সহজলভ্য, সস্তা, ও কার্যকর কৃমিনাশক খাওয়ানো যেতে পারে।
৭৯. চর্মরোগ দেখা দিলে কী করতে হবে?
• খামার থেকে কমপক্ষে ১৫-২০ দিন আলাদা করে ফেলতে হবে।
৮০. পাঁঠার এবং ছাগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা কি একই ধরনের?
• প্রায় একই।
৮১. প্রজননের উপযোগী পাঁঠাকে বিশেষ কী খাদ্য দিতে হয়?
• দৈনিক দশ গ্রাম গজানো ছোলা।
৮২. প্রয়োজনীয় মাত্রায় ছোলা কেন খাওয়ানো হয়?
• আমিষ সরবরাহের জন্য।
৮৩. পাঠী কত বয়স পর্যন্ত প্রজননক্ষম থাকে?
• ১০-৩৬ মাস পর্যন্ত।
৮৪. পাঁঠার শরীরের চর্বি কমানো যাবে কীভাবে?
• আটাশ থেকে ত্রিশ কেজি ওজনের পাঁঠার জন্য প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪০০ গ্রাম দানাদার খাদ্য দিতে হবে।
৮৫. কত মাস বয়সে পাঁঠা যৌবনপ্রাপ্ত হয়?
• চার থেকে পাঁচ মাস বয়সে।
৮৬. কত মাস বয়সে পাঁঠাকে প্রজনন কাজে ব্যবহার করা যায়?
• আট থেকে নয় মাস বয়সে।
৮৭. একটি পাঠাকে সপ্তাহে কতবার প্রজনন কাজে ব্যবহার করা যায়?
• সাত থেকে দশবারের বেশি নয়।
৮৮. কত মাস বয়সে খাসী ও পাঁঠাকে বাজারজাত করা যাবে?
• যথাক্রমে ছয় থেকে সাত মাস ও বারো মাসের মধ্যে।
৮৯. খামার করার জন্য কত মাস বয়সের ছাগী ও পাঁঠা সংগ্রহ করা দরকার?
• ছয় থেকে পনের মাস বয়সী ছাগী ও পাঁঠা সংগ্রহ করা দরকার। এ ক্ষেত্রে পাঠীর বয়স ৫-৭ মাস হতে পারে।
৯০. স্টল ফিডিং পদ্ধতিতে ছাগল পালন বলতে কী বুঝায়?
• ঘরে রেখে আবদ্ধ ব্যবস্থাপনায় ছাগল পালনকে স্টল ফিডিং বলে।
৯১. স্টল ফিডিংয়ে প্রাপ্তবয়স্ক একটি ছাগলের জন্য কতটুকু জায়গার দরকার?
• ৭-১০ বর্গফুট জায়গার দরকার।
৯২. ছাগলকে কত ঘণ্টা বাইরে রাখতে হবে?
• দিনে ৬-৮ ঘণ্টা।
৯৩. ছাগলকে কী পরিমাণ আঁশ-জাতীয় খাদ্য দিতে হবে?
• মোট খাবারের ৬০-৮০%।
৯৪. ছাগলের আঁশ-জাতীয় খাদ্য বলতে কি বুঝায়?
• ঘাস, লতা, পাতা ও খড় ইত্যাদি।
৯৫. পালের সব ছাগলকে এক সাথে রাখা ঠিক হবে কি?
• না, দুগ্ধবতী, গর্ভবতী ও শুষ্ক ছাগল এবং পাঁঠা আলাদা করে রাখা ভালো।
৯৬. বছরের কোন সময় বাচ্চাকে আলাদা অবস্থায় রাখা উচিৎ?
• শীতকালে।
৯৭. ছাগলের দুধ অন্যান্য দুধের তুলনায় পাতলা হয় কেন?
• অপেক্ষাকৃত বেশি পানি এবং কম চর্বি থাকে তাই।
৯৮. ছাগলের দুধে বিশেষ কোন গুণ আছে কী?
• ঔষধী গুণ আছে বিশেষ করে গ্যাসট্রিক আলছার রোগীর জন্য ছাগলের দুধ বেশ উপকারী।
৯৯. ছাগলের গায়ে চর্মরোগ দেখা দিলে কী করতে হবে?
• সুস্থ ছাগল থেকে আক্রান্ত ছাগলকে আলাদা রাখতে হবে। ১৫-৩০ দিন পরপর ০.৫% ম্যালাথিয়ন দ্রবণে ছাগলকে ডুবাতে হবে।
১০০. ছাগলের বাচ্চার ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়া হলে কী করতে হবে?
• মৃত্যুর ঝুঁকি কমানোর জন্য পরিচ্ছন্ন জায়গায় রেখে পরিমিত পরিমাণ দুধ এবং স্যালাইন খাওয়াতে হবে। স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে।
0 Comments